ক্ষেতের পাশে মৌ বাক্স স্থাপন করে মধু সংগ্রহ করায় টাঙ্গাইল জেলায় এবার সরিষার ফলন ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।
কৃষি বিভাগের তথ্য, টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলায় গত বছর ৪৫ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করা হয়। আর এবার চাষ হচ্ছে ৪৯ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে, অর্থাৎ জমির পরিমাণ হিসাবে এ জেলায় এবার এই রবিশস্যের আবাদ বেড়েছে ১০ শতাংশ। ফুলে ফুলে উড়ে বেড়ানো মৌমাছি সময়মতো স্বাভাবিক পরাগায়ণে ভূমিকা রাখছে ব্যাপক। এতে এবার ফলন বাড়বে গতবারের তুলনায় ২০ ভাগ।
টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. আহসানুল বাসার জানান, টাঙ্গাইলে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। মধু চাষে কৃষকদের আগ্রহী করতে বিনামূল্যে উন্নতমানের মৌ বাক্স বিতরণ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
সরেজমিনে দেখা যায়, সরিষা ক্ষেতের পাশে সারিবদ্ধ রাখা হয়েছে মৌ বাক্স। প্রতিদিন সকালে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়েন মৌচাষিরা। প্রতি বছরই স্থানীয় মৌচাষি ছাড়াও দূর-দূরান্ত থেকে টাঙ্গাইলের বাসাইল, কালিহাতী, ভূঞাপুর নাগরপুরসহ বিভিন্ন উপজেলায় মৌ বাক্স নিয়ে আসেন।
একটা সময় কৃষকরা তাদের সরিষা ক্ষেতের পাশে মৌ বাক্স স্থাপনে সরিষার ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করতেন। এখন তারা সেই ভুল ধারণা থেকে সরে এসেছেন। বরং ভালো ফলনের আশায় সরিষা চাষিরাই মৌচাষিদের ডেকে ক্ষেতের পাশে মৌ বাক্স স্থাপনের সুযোগ করে দিচ্ছেন।
স্থানীয় মৌচাষি হেলাল উদ্দিন জানান, করোনার কারণে এ বছর মধুর চাহিদা অনেক বেশি এবং দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে বড় বড় কোম্পানিগুলো এ বছর মধুর দাম কেমন দেবে তা এখনও বোঝা যাচ্ছে না। ওসব কোম্পানি প্রায় সব চাষির কাছ থেকে মধু সংগ্রহ করে বাজারজাত করে।
আরেক তরুণ চাষি জানান, ৪ বছর আগে বিসিক থেকে ট্রেনিং নিয়ে ৪০টি মৌ বাক্স দিয়ে ব্যাবসা শুরু করেন। এখন তার ১৫০টি বাক্স হয়েছে। এ বছর থেকে ৪ লাখ টাকার মধু বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, মৌ বাক্স স্থাপনে সরিষার ফলন ভালো হচ্ছে। আগে জানা ছিল না যে, মৌমাছি পরাগায়ণের মাধ্যমে সরিষার ফলন বেশি হয়।